বৃষ্টিতে দুর্ভোগ বেড়েছে খেটে খাওয়া মানুষের
টানা বর্ষণে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। চলছে ভাদ্র মাস। শ্রাবণ শেষে ভাদ্র মাসের ৮ দিনেও টানা বর্ষণ দেখা মিলছে না সূর্যের আলো। কখনও ভারী বৃষ্টি। কখনো বা গুঁড়ি গুঁড়ি। ভাদ্র মাসের শুরু থেকেই কিভাবে জোগাড় হবে ডাল-চালের খরচ। ছেলে-মেয়ের পড়ালেখার টাকা। আর এনজিওর কিস্তির টাকা। গত একমাস ধরে টানা বৃষ্টিতে মাথায় দিনমজুরদের চিন্তার বোঝা।
২৫ আগস্ট (বরিবার) বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এক শ্রেণির খেটে খাওয়া মানুষ বৃষ্টি মাথায় চালিয়ে যাচ্ছেন নিজ নিজ কর্ম। কৃষকের মাঠের কাজ অবশ্য থেমে গেছে। গ্রামীণ সড়কের মধ্যে দেখা মেলে এক কৃষক মাথায় করে শাপলা নিয়ে যাচ্ছেন বাজারে বিক্রি করতে।
তিনি বলেন, বাবা যত বৃষ্টিই হোক। কিস্তি মাফ নেই। এনজিও’র কিস্তির চাপেই বৃষ্টি মাথায় নিয়ে রাস্তায় বের হয়েছি। এভাবে বৃষ্টি হলে কিস্তির টাকা জোগাড় করা খুব মুশকিল হয়ে পড়বে। তাই টাকা আয় করতে কোমর পর্যন্ত পানির মধ্যে ডুব দিয়ে শাপলা তুলে এখন বাজারে যাচ্ছি বিক্রয় করতে।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, থেমে নেই ভ্যানচালকদের ভ্যান বা রিক্সা চালানো। ভ্যানের বা রিক্সার ওপরে পলিথিন টাঙিয়ে ছুটে চলছেন বিভিন্ন স্থানে। কথা হয় রিকশা চালক হারুন ওলাদারের সাথে তিনি বলেন, একদিন ভ্যান না চালানে ৫ জনের সংসারে দুমুঠো ভাত জোটে না। বৃষ্টি যতই হোক এর মধ্যেই বের হতে হয়। অতিবৃষ্টির কারণে এখন রাস্তায় তেমন কোন কাজ মিলছে না। বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা ধার করে সংসার চালাতে হয়।
বাকেরগঞ্জ কাঁচামাল ব্যবসায়ীরা বলেন, দিন রাত লাগাতার বৃষ্টির কারণে বিক্রি খুব কম হচ্ছে। মানুষ প্রয়োজনের বাইরে ঘর থেকে বের হচ্ছে না। অনেকেই এখন কর্মহীন হয়ে ঘরে রয়েছে। তাই বাজারে ক্রেতাদেরও দেখা মিলছে না।
এদিকে অতি বৃষ্টির কারণে কাঁচা রাস্তার পাশে বাজার ও মাছ বাজারে জমেছে পানি। পানি উপেক্ষা করেই কেনাবেচা করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। একদিকে টানা বৃষ্টি। অপরদিকে সবজির মাছের উচ্চমূল্য। হতদরিদ্র মানুষের দিন কাটছে সংকটে।