নরসিংদী জেলায় প্রতারক চক্রের নিকট জিম্মি চামড়ার মালিক।
১০/১২ বছর আগে একটা চামড়া কেনা হতো সর্বোচ্চ ৪০০০ টাকা সর্বনিম্ন ২৫০০ টাকা দিয়ে। বর্তমান গৃহপালিত পশুর চামড়ার বাজার শুধু প্রতারণার ব্যবসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ব্যবসায় শুধু লোকসান আর লোকসান। চামড়া শিল্পপণ্যের দাম দিনদিন বৃদ্ধি পেলেও ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না চামড়া বিক্রেতারা। চামড়ার সিন্ডিকেটের খবর জানে না কেউ।১৭/৬/২৪ ইং সোমবার কোরবানির চামড়ার দরদামের খোঁজখবর নিতে গেলে নরসিংদীর চামড়া বিক্রেতারা এসব কথা বলেন।সরেজমিনে দেখা গেছে, পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ শেষে কোরবানি দেওয়া পশুর চামড়াগুলো গ্রাম-গঞ্জের এতিমখানা ও কওমি মাদরাসার ছাত্ররা তাদের নির্দিষ্ট সমাজে ঘুরে ঘুরে বিনা টাকায় সংগ্রহ করছেন। মাদরাসা কর্তৃপক্ষের কাজ থেকে চামড়াগুলো নামমাত্র মূল্য দিয়ে কিনে নিচ্ছেন চামড়া ব্যাপারিরা। এছাড়া অনেকে পশুর চামড়া দান না করে ব্যাপারিদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছেন। চামড়া মূল্য জানতে চাইলে একাধিক সূত্রে জানা যায় কোরবানি তিনি প্রায় দুই লক্ষ টাকার গরু কোরবানি দিয়ে চামরা বিক্রি করেছেন মাত্র ৬০০ টাকা। চামড়ার টাকা গরিবদের এতিমখানা মাদ্রাসায় দিয়ে দেন। তিনি বলেন, কম দামে বিক্রি করা মানে, গরিব ও অসহায় এতিমদের হক মেরে খাওয়ার । মাধবদীতে বাহাদুরপুর গ্রামের একটি এতিমখানা মাদরাসার জন্য চামড়া সংগ্রহ করছেন মাদরাসার ছাত্ররা। আর এসব চামড়ার হিসাব রাখছেন হাফেজ মাওলানা মুফতি মো. ইব্রাহীম খলিল।জানতে চাইলে তিনি বলেন, চট্টগ্রামের হাটহাজারি মাদরাসায় লেখাপড়া শেষে এতিম খানায় চাকরি করছি। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ প্রতিবছরই কোরবানির ঈদে ছাত্রদের খাবার খরচের জন্য চামড়া সংগ্রহ করেন। কিন্তু এখন চামড়ার ন্যায্যমূল্য পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যাপারিরা আমাদের ভুলভাল বুজিয়ে নামমাত্র মূল্য দিয়ে চামড়া কিনে নেন।ভ্যানে করে চামড়া নিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা , নরসিংদী পৌরশহরের দত্তপাড়া মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা খায়রুল ইসলাম ফরাজি জানান, তাদের সংগ্রহ করা চামড়াগুলো গড়ে ৮৫০ টাকা করে বিক্রি করেছেন।তিনি বলেন, ‘চামরার বাজার সবসময় একটা সিন্ডিকেটের হাতে দখল থাকে, তবে তারা প্রকাশ্যে আসে না। আমরা সরকারের কাছে জোর দাবি জানাই, যেন চামরার সিন্ডিকেট ধ্বংস করে এবং চামড়ার ন্যায্যমূল্য পাওয়া ব্যবস্থা করেন।’প্রায় ১৭ বছর ধরে চামরা ব্যবসা করেন আলাউদ্দিন লেদু। তিনি বলেন, ‘একযুগ আগে একটা চামড়া ২৫০০ টাকায় কিনে,বিক্রি করলে প্রতি চামরায় ৫০০ টাকাও লাভ হতো। এখন এক চামড়া কিনতে হয় ৫০০ টাকায়। প্রতি পিস ৫০ টাকা লাভ করা কঠিন হয়ে পরেছে।’তিনি আরো বলেন, ‘গত দুই বছর আগে ১৫০ টাকা করে টেনারিতে চামরা বিক্রি করেছি। সেই আতঙ্ক কাটেনি। আসলে কি এই ব্যবসাটা প্রতারণার শিকার।
এদিকে দেখা গেছে- নরসিংদীতে ইটাখোলা, ভেলানগর, পাঁচদোনা ও মাধবদীতে পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে চামড়ার স্তূপ দিচ্ছেন বিভিন্ন এতিমখানা মাদরাসার লোকজন। এর মাঝে স্থানীয় চামড়ার ব্যাপারিরাও রয়েছেন। এসব চামড়া তিনটা হাতবদলে ঢাকার হাজারীবাগ, পোস্তখোলা, যাত্রাবাড়ী, নারায়াণগঞ্জসহ বিভিন্ন টেনারি মালিকদের কাছে পৌঁছাবে। সর্বসাধারণের দাবি সরকার যেন চামড়ার সিন্ডিকেট ধ্বংস করে ন্যায্য মূল্য পাওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।