কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে দিনাজপুরের হিলিতে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। দুদিনের ব্যবধানে দেশীয় পেঁয়াজ কেজিতে দাম বেড়েছে ১০ টাকা। দু’দিন আগে শনিবার (১ জুন) প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকা দরে। আর সোমবার (৩ জুন) প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা দরে।
এতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা।
ক্রেতরা বলছেন, ঈদুল আজহার আগে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, সরবরাহ কমে যাওয়ায় মোকামগুলোতেই দাম বেশি।
এদিকে প্রায় ৫ মাস ৬ দিন বন্ধ থাকার পর ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
তবে রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রেখেছেন বন্দরের আমদানিকারকরা।
সোমবার (৩ জুন) দুপুরে হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দুই দিন আগে দেশীয় পেঁয়াজ ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এর দু’দিন যেতে না যেতেই তা বেড়ে দেশীয় পেঁয়াজের দাম ৮০ টাকা কেজিতে ওঠেছে। এখন সেই পেঁয়াজ কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে গেলো মাসের (১৪ মে) বিকেল ৬ টায় ভারতীয় একটি ট্রাকে ৩০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়।
ব্যবসায়ীরা জানান, ৫৫০ মার্কিন ডলার রপ্তানিমূল্য ও ৪০ শতাংশ শুল্ক হার নির্ধারণ করেছে। এতে আমদানি করে লোকশান গুনতে হচ্ছে। তাই গত মাসের ৫ তারিখে আমদানির অনুমতি মিললেও আমদানি বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতা আবু তাহের বলেন, কিছু দিন আগে আমদানির খবরে দেশীয় পেঁয়াজের মোকামগুলোতে দাম ওঠানামা করেছে।
রবিবার (২ জুন) মোকামে পাইকারী পেঁয়াজ কিনেছি ৩ হাজার টাকা মণ। এতে মোকামে কিনতেই ৭৫ টাকা কেজিতে পড়েছে। এরপর পরিবহন খরচ আছে। আজকে আমি ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি দেশীয় পেঁয়াজ। আর ভারতীয় পেঁয়াজ ৬২ টাকা কেজি দরে কিনে খুচরা ৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি।’
পেঁয়াজ কিনতে আসা ফরহাদ আলী বলেন, ‘দুদিন আগেই ৭০ টাকা কেজি দরে কিনেছি দেশীয় পেঁয়াজ। আর আজ কিনলাম ৮০ টাকা কেজি দরে। মাত্র দুদিনের ব্যবধানেই প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১০ টাকা ‘
হিলি স্থলবন্দর পেঁয়াজ আমদানিকারকরা জানান, ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর ইতিমধ্যেই ২০ জন আমদানিকারক নতুন করে ২৭ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি পেয়েছেন। পেঁয়াজ রপ্তানিতে ভারত সরকারের আরোপ করা ৪০ শতাংশ শুল্ক এখনও অব্যাহত আছে। ৪০ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার না করলে পেঁয়াজ আমদানি করা সম্ভব হবে না। ৪০ শতাংশ শুল্ক পরিশোধ করে প্রতি কেজি পেঁয়াজ আমদানিতে অতিরিক্ত ২৫ টাকা গুনতে হবে। এতে করে বন্দরের চার্জসহ সব খরচ দিয়ে কেজি প্রতি পেঁয়াজের দাম পড়বে ৭০ টাকার ওপরে। বর্তমান দেশের বাজার অনুযায়ী ওই দামে পেঁয়াজ আমদানি করলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে আমদানিকারদের। পেঁয়াজ আমদানি করলে ট্রাক প্রতি সাড়ে ৬ লাখ টাকার মতো লোকসান গুনতে হবে। তাই ক্ষতির আশঙ্কায় আমদানিকারকরা পেঁয়াজ আমদানিতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে।
তারা আরো জানান, ভারত থেকে এক গাড়ি পেঁয়াজ আমদানি করে ক্রেতা না পাওয়ায় স্থানীয় বাজারের খুচরা বিক্রেতাদের কাছে ৬২ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়েছে। এতে অনেক টাকা লোকশান গুনতে হয়েছে।