আওয়ামী লীগ নেতার পায়ের রগ কেটে দিল ‘বিএনপির নেতা-কর্মীরা!
সিরাজগঞ্জে ইউনিয়ন স্তরের এক আওয়ামী লীগ নেতাকে বিএনপির নেতাকর্মীরা মারধরের পর দুই পায়ের রগ কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সদর উপজেলার সয়দাবাদ পূর্নবাসন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে সদর থানার ওসি হুমায়ুন কবীর জানান।
আহত হাজী সেলিম রেজা সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও ইউপির সাবেক সদস্য। সে একই ইউনিয়নের পূর্বমোহনপুর গ্রামের হারু সেখের ছেলে।
তার দুই পা, ডান হাত ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি মাথায় কুপিয়ে জখম করা হয়েছে বলে জানা যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার অভিযোগ, বিএনপি নেতাকর্মীদের ২০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে ‘রাজি না হওয়ায়’ তাকে ‘হত্যার উদ্দেশ্যে’ মারধর করা হয়েছে। যদিও এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিএনপি।
সেলিমের ছেলে আব্দুল জলিল বলেন, “সকাল ৭টার দিকে ৩০-৩৫ জন বিএনপির নেতাকর্মী আমাদের বাড়ির সামনে থেকে বাবাকে একটি রিকশাভ্যানে করে তুলে নিয়ে যায়। এরপর তারা বাবাকে পিটিয়ে দুই পা, ডান হাত ভেঙে দেয়।
পরে দুই পায়ের রগ কেটে দিয়ে ও মাথায় কুপিয়ে জখম করে অচেতন অবস্থায় পূর্ববাঐতারা স্কুলের সামনে অচেতন অবস্থায় ফেলে রেখে যায়।”
তিনি বলেন, “বাবাকে সেখান থেকে উদ্ধারের পর সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। বাবাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।’
সয়দাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইদুল ইসলাম রাজা জানান, “সেলিম বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত যুবদল নেতা সোহানুর রহমান রঞ্জু হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। সরকার পতনের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। সম্প্রতি হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে ৩ দিন আগে তিনি বাড়ি ফিরেছিলেন।”
রাজার অভিযোগ, “সেলিম বাড়ি ফেরার পর বিএনপি নেতাকর্মীরা তার কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা চেয়েছিল। চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় তাকে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে বর্বরোচিতভাবে মারধর করা হয়েছে।”
এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সরকার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, “কুখ্যাত সন্ত্রাসী সেলিম রেজা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত যুবদল নেতা রঞ্জু ও ২০১৪ সালে নিহত ইউনিয়ন যুবদল নেতা জবান আলী হত্যা মামলার আসামি।
“সরকার পতনের পর থেকে তিনি পলাতক ছিল। এলাকায় আসার পর স্থানীয় জনতা তাকে ধরে মারধর করার পর পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে বিএনপির কোনো নেতাকর্মী জড়িত নয়।”
ওসি হুমায়ুন কবীর বলেন, সেলিম রেজাকে মারধরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি।
এদিকে আহত আওয়ামী লীগ নেতা হাজী সেলিম রেজার পুত্র ও আওয়ামী লীগ নেতারা বিএনপির বক্তব্য প্রত্যাখান করে দ্রুত ঘটনার সাথে জড়িতদের আটক করার দাবি জানান। তারা অবিলম্বে দোষীদের আটক করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান এবং প্রশাসনকে নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালন করতে আহবান জানান।