সরকারি বিধান নেই তারপরও সনদের টাকা নেয়ার অভিযোগ সহকারী প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
বগুড়ার আদমদিঘি উপজেলার কোমারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষা সমাপনীর সনদ দিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
শিক্ষার্থীদের থেকে তিনি ২০০ টাকা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। টাকা ছাড়া সনদ পাচ্ছে না কোনো শিক্ষার্থী। অন্যান্য স্কুল থেকে তথ্য যাচাই করে এবং শিক্ষক সমিতির সেক্রেটারি ফিরোজ আহমেদ বলেন এরকম কোন বিধান আমাদের নেই বা কোন শিক্ষা অফিসার আমাদেরকে বলেনি কোন টাকা-পয়সা নিতে হবে।
এদিকে, স্থানীয় এক সংবাদকর্মী উপজেলার ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক কুমটি আল ফাহাদসহ বিষয়টি নিয়ে জানতে বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে বিদ্যালয়ে গেলে শিক্ষক রেজাউল করিম তার সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। একপর্যায়ে তিনি ওই সংবাদকর্মীকে ও সমন্বয়ক কুমটির সদস্যদের দেখে নেওয়ার ও হুমকি দেন মোবাইল ফোনে।আরো বলেন আমি লোকজনদের বলে দিব আমার কাছে থেকে সেই টাকার অর্ধেক ভাগ দিতে হবে তা না হলে আমি উপজেলার শিক্ষা অফিসার সাথে কথা বলে তোমার চাকুরী বারোটা বাজিয়ে দেব। একথা শিক্ষক বলেন লোকজনদের।
স্কুলটি থেকে পঞ্চম শ্রেণী পাস করা শিক্ষার্থীর বাবা আনিছুর রহমান বলেন আমর দুই সন্তান স্কুলে পরে তাদের জন্য ও ৪০০টাকা দিয়েছি । এবং সেই টাকা পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে টাকা দিতে হয়েছে। আরেক শিক্ষার্থী মোঃজুনায়েদ ,ছাদিক , পারভেজ, বলেন পঞ্চম শ্রেণির সার্টিফিকেট প্রয়োজন। কিন্তু সহকারী প্রধান শিক্ষক টাকা ছাড়া কাওকে সার্টিফিকেট দেব না এমনকি টাকা ছাড়া পরিক্ষা দিতে দিবো না। পরে সেই সব শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার আগেই ২০০ করে টাকা দিয়ে পরীক্ষার দিতে দিয়েছন ।
এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মো: জিয়াউর রহমান বলেন, আমি গার্মেন্টসে চাকরি করি তারপরও ২০০ টাকা দিতে হয়েছে। প্রধান শিক্ষক বলেন, টাকা ছাড়া কোনো সার্টিফিকেট দেওয়া হয় না। আবার বলেন এ টাকা দিয়ে আমি স্কুলে একটা ফান্ড তৈরী করব সেই জন্যই টাকা ২০০ করে নেয়া হচ্ছে। কি ফান্ড তৈরি করবে? এখনো সে তথ্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে এলাকাবাসী বলেন, সার্টিফিকেট দিয়ে শিক্ষার্থীদের থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে শুনে ছোট আখিরা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সার্টিফিকেট কি কিনে নিয়েছে । পরবর্তীতে কোথা থেকে কিনে আনা হয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন সার্টিফিকেট কোন কিনা লাগে না সেটা ব্যাপারে যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে ২০ বা ৫০ টাকা দেয় তা সেক্ষেত্রে নেওয়ার অধিকার আছে।
আদমদীঘি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রহিম প্রধান কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, কোনো শিক্ষার্থী বা অভিভাবকের কাছ থেকে জোর করে টাকা নেয়া যাবেনা। খুশি হয়ে কেউ মিষ্টি নিয়ে আসে, আবার কেউ কেউ চা-নাস্তা করার জন্য ২০/৫০ টাকা দেয়। এরকম সব স্কুলে হয়।
তবে তিনি বলেন, আমাদের নিজ খরচে সার্টিফিকেট প্রিন্ট করে আনতে হয়। এর জন্য সরকারিভাবে কোনো খরচ দেওয়া হয় না।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার বলেন , কুমারপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক সনদ দিয়ে টাকা নিচ্ছেন এমন কোনো লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ পাইনি। তবে সনদ দিয়ে টাকা নেওয়ার কোনো বিধান নেই, ফ্রিতে দেওয়ার কথা। অভিভাবক বা শিক্ষার্থীরা খুশি হয়ে কিছু দিলে, সেটা নেয়া যাবে।