April 19, 2025, 5:02 am
শিরোনামঃ
জামায়াতে ইসলামী চাঁদবাজ,ট্যান্ডারবাজ ও অসৎ নেতৃত্বের জন্য একটি ট্রেড সংগঠন- সুনামগঞ্জ ১ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী উপাধ্যক্ষ মাওলানা তোফায়েল আহমদ খান ব্যাটারিচালিত রিকশা খালে : নিখোঁজ শিশু উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিস তাহিরপুর উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস থাকা সত্ত্বেও রাস্তা না থাকায় নিভানো যাচ্ছে না আগুন…. নওগাঁয় মানবিক বাংলাদেশ শীর্ষক বিএনপির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত। রাজশাহীতে হাতকরা পরা অবস্থায় আসামী পলায়ন ছাতকে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা আবু বক্কর সিদ্দীক গ্রেফতার বান্দরবানে জামায়াতে ইসলামীর বিশাল কর্মী ও সুধী সমাবেশ উপলক্ষ্যে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা : সরকারি গাড়িতে পার্কে ঘুরতে যাওয়ার মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে ইউএনও’কে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা কক্সবাজার – মহেশখালী নৌ রুটে প্রথমবার চালু সরকারি হালট উদ্ধার করে প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে এলাকাবাসীর গণস্বাক্ষরিত অভিযোগ

ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে কোটি টাকা ব্যায়ে সৌর বিদ্যুতের সড়কবাতি স্থাপনে দুর্নীতির অভিযোগ

মোঃ হামিদুজ্জামান জলিল স্টাফ রিপোর্টার।

ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে কোটি টাকা ব্যায়ে সৌর বিদ্যুতের সড়কবাতি স্থাপনে দুর্নীতির অভিযোগ

 

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌর এলাকার নয়টি ওয়ার্ডে “গ্রীনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যে কালীগঞ্জ পৌর এলাকায় সৌর বিদ্যুতায়িত সড়ক বাতি স্থাপন”- প্রকল্পের অধীনে সর্বমোট ১১২ টি সৌর বিদ্যুৎ এর সড়ক বাতি স্থাপন করা হয়। এসব সৌর বিদ্যুতের সড়ক বাতিগুলো বছর পেরতে না পেরতেই হারাতে বসেছে তার কার্যকারিতা। সন্ধ্যার দিকে বাতিগুলো জ্বললেও রাত বাড়ার সাথে সাথে কমে আলো এবং রাতের আধার কাটার বেশ পূর্বেই নিভে যায় সেই আলো।ফলে ওইসব স্থানে অন্ধকারাচ্ছন্ন এক ভুতুড়ে পরিবেশ তৈরি হয়। কালীগঞ্জ পৌরসভাকে অন্ধকার মুক্ত রাখতে ১কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১১২ টি সৌর বিদ্যুতের খুঁটি তৎকালীন পৌর কাউন্সিলরদের দেখানো নির্ধারিত স্থানে স্থাপন করা হলেও এর সুফল সেভাবে পাচ্ছে না পৌরবাসী। জানুয়ারি ২০২৩ সাল হতে ডিসেম্বর ২০২৪ এর মধ্যে সৌর বিদ্যুতের খুটিসহ সড়ক বাতি স্থাপন করার কথা থাকলেও ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে অর্ধেক আর বাকিটা আগস্ট মাসে সম্পন্ন করে মেসার্স কুন্ডু ট্রেডার্স নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান । পৌর এলাকায় প্রতিটি সৌর বিদ্যুতের খুঁটি নির্মাণে ব্যয় করা হয় ১ লাখ ২২ হাজার টাকা। কিন্তু সৌর বিদ্যুতের সড়ক বাতিগুলোতে ব্যবহারিত সরঞ্জামাদি অত্যন্ত নিম্নমানের হওয়ায় অল্প দিনেই তা নষ্ট হতে চলেছে বলে পৌরবাসীর অভিযোগ। সড়কে সৌর বিদ্যুতের খুঁটি স্থাপন প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি করে অর্থলোপাট করা হয়েছে বলেও মনে করেন পৌরবাসী । কালীগঞ্জ পৌর এলাকার ১১২ টি সৌর বিদ্যুতের সড়ক বাতি স্থাপনের পূর্বে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষাণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির আওতায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়ের অধীনে কালীগঞ্জ পৌর এলাকায় প্রায় ১৩০ টি সৌর বিদ্যুতের সড়ক বাতি স্থাপন করা হয়েছিল। যার বেশির ভাগ বাতিই ইতিমধ্যে সম্পূর্ণরূপে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। ওই সব বাতিগুলো রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতের উদ্যোগও কখনো নেওয়া হয়নি। ফলে পৌরবাসীকে অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশ থেকে আলোকিত পরিবেশে আনতে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হলেও তা কোনো কাজে আসছে না। সরেজমিনে কালীগঞ্জ পৌরসভার ৫ এবং ৭ নম্বর ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, সৌর বিদ্যুতের প্রায় অধিকাংশ সড়ক বাতি জ্বলছেনা। আড়পাড়ায় অবস্থিত কালীগঞ্জ পৌর কবরস্থানে সৌর বিদ্যুতের খুঁটিতে বৈদ্যুতিক তারের সংযোগ দিয়ে আলো জ্বালানো হয়েছে। সেখানে থাকা পাঁচটি সৌর বিদ্যুতের খুটির মধ্যে ৩ টিতে রয়েছে বৈদ্যুতিক সংযোগ একটি সম্পূর্ণরূপে অচল এবং অপরটি সচল থাকতে দেখা যায় । নাম প্রকাশে অনিচ্ছু কালীগঞ্জ পৌরসভার একজন কর্মচারী জানান, সৌর সড়কবাতি প্রকল্প কালীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক এবং বর্তমান প্রকৌশলী ঝিনাইদহের এক প্রকৌশলীর সহায়তা এস্টিমেট করেন। পরে পৌর পরিষদের সহায়তায় পছন্দের ঠিকাদারকে দিয়ে কাজটি করান। একটি খুঁটি স্থাপন করতে ১ লাখ ২২ হাজার টাকা কিভাবে ব্যয় ধরা হলো? আর এত টাকা ব্যয় করে লাগানো বাতিগুলো দ্রুত নষ্ট হয়েই বা যাবে কেনো? শুনেছি পৌর এলাকার বাকুলিয়া গ্রামের সৌর বিদ্যুতের সোলার ব্যবসায়ী আরিফ নামের এক ব্যাক্তির নিকট থেকে খুঁটি প্রতি সোলার সেট ৩০ হাজার টাকায় কিনে তা লাগানো হয়। অর্থাৎ সৌর সড়কবাতি প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি করে হরি লুট করা হয়েছে জনগণের অর্থ।
শিবনগর কাচারি জামে মসজিদের মোয়াজ্জিন শাকিল আহমেদ জানান,ভূমি অফিস এলাকার মধ্যে দুইটি নতুন সৌর বিদ্যুতের বাতি দেওয়া হয়েছে, যা ফজরের আজানের পূর্বেই নিভে যায়। আর ভূমি অফিসের প্রধান ফটকের সামনে থাকা সড়ক বাড়তিটি জ্বলে না এবং আমাদের মসজিদের কর্নারে থাকা সড়ক বাতিটি মাঝেমধ্যে জ্বলে।কালীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাহী প্রকৌশলী কবির হাচান জানান, এখন শীতকাল হওয়ায় রাত বড়। যে কারণে সৌর বিদ্যুতের সড়ক বাতি গুলোতে শেষ রাতের দিকে আর চার্জ থাকে না। তাই বাতিগুলো হয়তো নিভে যায়। আমরা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সিডিউল অনুযায়ী কাজ বুঝে নিয়েছি। এরপরও যদি কোথাও কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে সেগুলো ঠিক করা হবে।তবে প্রতিটি খুঁটির ব্যয় ১ লাখ ২২ হাজার টাকা ধরা হয়েছে, যার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি তা এড়িয়ে যান। কালীগঞ্জ পৌরসভায় সৌর বিদ্যুতের সড়ক বাতি স্থাপনকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স কুন্ডু ট্রেডার্স এর স্বত্বাধিকারী প্রলয় কুন্ডু জানান,মানসম্মত সোলার প্যানেল দিয়েই সৌর সড়ক বাতি স্থাপন করা হয়েছে। এই সড়ক বাতির কোন ত্রুটি থাকলে আমরা তা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঠিক করে দেব। তবে শীতের কুয়াশার কারণে কিছুটা আলো কম হতে পারে। আর এটা যদি পৌর কর্তৃপক্ষ রক্ষণাবেক্ষণ করে তাহলে আর সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তাছাড়া আমাদের প্রতিটি খুঁটিতে নাম-ঠিকানা এবং নাম্বার দেওয়া আছে। সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারলে আমরা ওইগুলো মেরামত করে দেবো। কালীগঞ্জ পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেদারুল ইসলাম বলেন, সৌর সড়ক বাতির আলো ঠিকঠাক জ্বলছে না এমন অভিযোগ আমার কাছেও আছে। আপনি বললেন, আমি ব্যাপারটি খতিয়ে দেখব।আর সড়ক বাতি স্থাপনে যদি কোনো অনিয়ম দুর্নীতি হয়ে থাকে তাহলে তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুকে আমরা