বঙ্গভবন থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরিয়ে ফেলায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ
গতকাল ১১ নভেম্বর বঙ্গভবনের দরবার হল থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। সরকারের উপদেষ্টারা নিজেরা ছবি সরানোর কাজে নেতৃত্ব দিয়েছে। অথচ এই সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তার উপদেষ্টারা যে সংবিধানের অধীনে শপথ গ্রহণ করেছে সেই সংবিধানে ৪(ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার ও প্রধান বিচারপতির কার্যালয় এবং সকল সরকারি ও বেসরকারি অফিস, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষের প্রধান ও শাখা কার্যালয়, সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনসমূহে সংরক্ষণ ও প্রদর্শন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বঙ্গভবনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও কার্যালয় থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরিয়ে এই সরকার ও তার উপদেষ্টারা শপথ ভঙ্গ করেছেন। তাদের দ্বারা সংঘটিত শিষ্টাচার বহির্ভূত এই হীন কর্মকাণ্ড একইসাথে অসাংবিধানিক এবং দেশের প্রচলিত আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ । আবার মহামান্য রাষ্ট্রপতির বাসভবনে কোথায় কোন জিনিস থাকবে এটা তদারকির দায়িত্ব একমাত্র মহামান্য রাষ্ট্রপতির। রাষ্ট্রপতি সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয়ে তাঁর নিকট শপথ গ্রহণ করা উপদেষ্টাদের তদারকি রাষ্ট্রাচারের রীতিনীতি পরিপন্থী এবং চরম ধৃষ্টতার শামিল। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সাংবিধানিক বিধান না মানাই প্রমাণ করে এই সরকার সংবিধান ও আইন কোনো কিছুকে তোয়াক্কা করে না। তারা সাধারণ মানুষের আবেগ পুঁজি করে এবং তাদেরকে জিম্মি করে সমগ্র রাষ্ট্রকে একটা খেলা ঘরে রূপান্তরিত করেছে। অবৈধ ও অগণতান্ত্রিক ফ্যাসিস্ট ড. ইউনূসের নেতৃত্বে সরকার আইনের শাসনের প্রতি কোনো প্রকার শ্রদ্ধা প্রদর্শন করছে না। ফলে দেশের আইন-শৃঙ্খলার নাজুক পরিস্থিতি, দ্রব্যমূল্যের উঊর্ধ্বগতি ও জানমালের নিরাপত্তাহীনতায় মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এই সরকারের জনগণকে শান্তি ও স্বস্তি দেওয়ার কোনো অভিপ্রায় নেই। তারা বাংলাদেশের মানুষের সম্মিলিত অর্জনের ইতিহাস, ঐতিহ্য মুছে ফেলতে এবং ভিন্নমত দমনে অধিক সোচ্চার।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী অবিসংবাদিত নেতা। বাঙালি জাতি, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং বঙ্গবন্ধু এক ও অবিচ্ছেদ্য। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর বঙ্গবন্ধুকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার অপচেষ্টা করা হয়েছিল, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে এদেশের সাধারণ মানুষ হৃদয়ের গহীনে ধারণ করেছিল। মহান মুক্তিযুদ্ধ এদেশের মানুষের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। আর সেই ইতিহাসের মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যতদিন বাঙালি জাতি থাকবে ততদিন এ জাতিগোষ্ঠীর স্মৃতিতে ও অনুপ্রেরণায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অনুকরণীয় ও অমলিন হয়ে থাকবে, ইনশাল্লাহ।
জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।