রূপগঞ্জের গোলাকান্দাইল ইউপি কমপ্লেক্স ভবন ৬২ বছরেও নির্মাণ হয়নি \ সেবা প্রদান ব্যাহত
৬২ বছরেও নির্মাণ করা হয়নি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন পরিষদের আধুনিক কমপ্লেক্স ভবন। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে সেবা প্রদান। ১৫ বছর ধরে সচিবের পদ শূণ্য থাকায় ৪০ হাজার ভোটারসহ প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষের সেবা প্রদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম চলছে একতলা বিশিষ্ট ভবনের একটি কক্ষে। ভবনের পলেস্তরা খসে পড়ছে। ইট-সুরকির দেখা মিলছে। ছাদের রড বিদ্যমান। প্রতিবছরই ঝুঁকিপূর্ণ এ ভবন মেরামত ও সংস্কার করা হয়। কিন্তু কিছুদিন পরেই আবার পূর্বের অবস্থানে ফিরে যায়। পরিষদের সীমানা প্রাচীর নেই। বারান্দায় কুকুর শুয়ে আছে। ছাগল হাঁটাচলা করছে। ওয়ারিশ সনদ জালিয়াতির অভিযোগে শফিকুল ইসলাম নামের একজন সচিবকে অপসারণের পর থেকেই পদটি শূণ্য রয়েছে। বর্তমানে এখানে সচিব না থাকায় ভুলতা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব খোরশেদ আলম সপ্তাহে দু’দিন অফিস করেন। তাতে এলাকাবাসী কাঙ্খিত সেবা পায় না বলে অভিযোগ করেছেন। এছাড়া সন্ধ্যা হলে প্রায়ই এখানে মাদকাসক্ত, বখাটে ও জুয়ারিদের আড্ডা বসে। ইউনিয়ন পরিষদটি সবসময়ই থাকে অরক্ষিত।
১৯৬২ সালে একই এলাকার বাসিন্দা রায় মোহনের ছেলে ধীরেন্দ্র নাথ ইউনিয়ন পরিষদের নামে ১৮ শতাংশ জমি দান করেন। একই বছর পূর্ব পাকিস্তান সরকার সেখানে একতলা বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করেণ। ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-বাইপাস সড়কের সংযোগস্থলে পরিষদ ভবন থাকায় অবস্থার দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান। কিন্তু নানা প্রতিক‚লতায় সেবা গ্রহণে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়ছে।
রূপগঞ্জ উপজেলায় ৭টি ইউনিয়ন পরিষদ ও ২টি পৌরসভা রয়েছে। এদের মধ্যে জমির জটিলতায় মুড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ ও গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করা হয়নি। এলাকাবাসী পৃথক পৃথক দাবি জানিয়ে আসলেও তারা কোন সুফল পাচ্ছে না।
গোলাকান্দাইল গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন সংলগ্ন ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের পাশে একটি সরকারি পতিত জমি রয়েছে। ওই জমিতে ইউনিয়ন পরিষদের ভবন নির্মাণ করা হলে জটিলতা নিরসন হয়। দীর্ঘদিন ধরে এখানে ভবন নির্মাণের জন্য এলাকাবাসী দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু কোন ফল হচ্ছে না। তাতে সেবা পেতে আমরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছি।
গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নাসির মিয়া বলেন, ৬২ বছরের পুরোনো ভবনে ঝুঁকি নিয়ে আমাদের অফিস করতে হচ্ছে। জমি যা আছে তাতেই আধুনিক ভবন নির্মাণ করা সম্ভব। শুধু ভবন নির্মাণের আশ্বাস মিলছে। কিন্তু ফল হচ্ছে না।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, গোলাকান্দাইল ও মুড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শিগগিরই সকল জটিলতা নিরসন করে ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)