শেরপুরের নকলায় ২ মাস পর কবর থেকে উত্তোলন হলো বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শফিকের লাশ
শেরপুর জেলার নকলা উপজেলায় মৃত্যুর ২ মাস পর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে নিহত গার্মেন্টসকর্মী শফিক মিয়ার (২৮) লাশ উত্তোলন করা হয়। নারায়নগঞ্জ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্টেট মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে কবর থেকে শফিকের মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন। ৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দুপুরে ১ নং গণপদ্দী ইউনিয়ের চিথলীয়া গ্রামে একটি পারিবারিক কবরস্থান থেকে শফিকের লাশ উঠানো হয়।
লাশ উত্তোলনের সময় উপস্থিত ছিলেন, শেরপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারি কমিশনার আব্দুল হালিম, মামলার তদন্তকর্মকর্তা নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁও থানার সহকারি পরিদর্শক (এসআই) ওলিয়ার রহমান, নকলা থানার সহকারি পরিদর্শক (এসআই) আশরাউল আলমসহ অন্যান্ন পুলিশ সদস্য, নিহতের পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় সাংবাদিকগণ।
মৃত শফিক মিয়া (২৮) চিতলীয়া গ্রামের জুলহাস মিয়ার ছেলে। সে সোনারগাঁও থানা এলাকায় মিনা গার্মেন্টসে শ্রমিকের কাজ করত। বিবাহিত জীবনের শফিক ৩ কন্যাসন্তানের জনক। পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আগষ্ট মাসের মাসের ৪ তারিখে সোনারগাঁও থানাধীন ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাঁচপুর সেনপাড়া নামক স্থানে পাকা সড়কে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের উপর চালানো গুলিতে শফিক গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায়। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন ওইদিন রাতে শফিকের মরদেহ বাড়িতে এনে সকলের অনুমতিক্রমে পরদিন তাঁকে একটি পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করে।
পরবর্তীতে শফিকের চাচাতো ভাই আবু হানিফ (৪০) বাদী হয়ে ২৩/০৮/২০২৪ ইং তারিখে সোনারগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা (মামলা নম্বর-১৫, তারিখ-২৩/০৮/২০২৪ ইং) দায়ের করেন। মামলায় আসামী করা হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাদেরসহ ১৩৫ জনকে। পরবর্তীতে ১১/০৯/২০২৪ ইং তারিখ নারায়নগঞ্জ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্টেট মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে কবর থেকে শফিকের মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন।
ভুমিহীন শফিকের পরিবারের বাস দরিদ্রসীমার নীচে। বাবা জুলহাস মিয়া মাছ বিক্রি করে যা পেত তা দিয়ে কোনমতে খেয়ে না খেয়ে চলত শফিকের পরিবার। কিছুদিন আগে জুলহাস অসুস্থ্য হয়ে শয্যাশায়ী হওয়ার পর শফিক পরিবারের মুখে খাবার তুলে দিতে নারানগঞ্জের সোনারগাঁও এলাকায় তৈরি পোষাক কারখানায় শ্রমিকের চাকরি নেয়। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্যকে হারিয়ে এখন শফিকের পরিবার ভাসছে অকূল সাগরে জানিয়েছেন শফিকের বাবা জুলহাস মিয়া। শোকে পাথর শফিকের মা, স্ত্রীসহ অবুঝ ৩ শিশুসন্তান।
বার্তা প্রেরক
মো: ফিরোজ উদ্দিন
শেরপুর
০৩/১০/২০২৪