চট্টগ্রামে প্রয়াত সংসদ বাদলের কবরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ : দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সাবেক কার্যকরী সভাপতি ও সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এম মইন উদ্দীন খান বাদলের কবরে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ ১৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুইটার দিকে চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনা লিখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন তাঁর স্ত্রী সেলিনা খান বাদল। পাশাপাশি তিনি থানায় অভিযোগও করেছেন।
মইন উদ্দীন খান বাদল ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট থেকে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৪ সালে দশম ও ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৯ সালের ৭ নভেম্বর তিনি মারা যান। সারোয়াতলীর বাড়ির পাশে তাঁকে কবর দেওয়া হয়। গত ৫ আগস্ট ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর আজ১৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার তাঁর কবরস্থানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয় বলে প্রয়াত বাদলের স্ত্রী সেলিনা খান বাদল অভিযোগ করেন।
সেলিনা খান বাদল তার ফেসবুক পেইজে লিখেছেন, ‘কতিপয় সন্ত্রাসী আজ দুপুরে গাড়ি নিয়ে এসে মইন উদ্দীন খান বাদলের পৈতৃক ভিটার কবরে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয়। …এখন কবরেও মানুষ শান্তিতে থাকতে পারবে না।’
ফেসবুকে শেয়ার করা ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, কবরের ওপর আগুন জ্বলছে। এ ছাড়া ভাঙচুরের চিহ্ন রয়েছে কবর ও আশপাশে।
জানতে চাইলে সেলিনা খান বাদল বলেন, ‘একটি গাড়ি নিয়ে এসে কয়েকজন দুর্বৃত্ত কবরস্থানের ওপরের গাছ, ফটক ও নামফলক ভাঙচুর করে। এরপর কবরের ওপর আগুন ধরিয়ে দেয়। আমরা কেউ ছিলাম না। বিষয়টি থানায় জানানো হয়েছে।’
সেলিনা খান আরও বলেন, ‘একটি নিরপেক্ষ সরকারের আমলে যদি মানুষ কবরেও শান্তিতে থাকতে না পারে, তাহলে আমরা কোথায় যাব? আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছি। বাদল কখনো কোনো দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তাঁর কোনো বদনামও নেই। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।’
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম সারোয়ার জানান, কিছু দুষ্কৃতকারী কবরে ভাঙচুর ও আগুন লাগিয়েছে। অভিযোগ শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। বিষয়টির তদন্ত চলছে। এদিকে সাবেক সাংসদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মইন উদ্দীন খান বাদলের কবরে ভাঙচুর ও আগুন দেয়ার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন জাতীয় দরগাহ মাজার খানকাহ শরীফ সংরক্ষণ ও রক্ষা কমিটির সমন্বয়ক স ম জিয়াউর রহমান। তিনি বলেন, ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর থেকে সারা দেশে স্বাধীনতা বিরোধীরা যেভাবেই সারা ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড করছে তা ১৯৭১ সালের ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ডকে হার মানায়। মাজারে হামলা ও ভাংচুর, মন্দিরে হামলা ও অগ্নি সংযোগ, লুটপাটসহ নানা অপকর্ম চলছে এবং দেশের বিশিষ্টজনের কবরেও ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ করছে। এটা একটি সভ্য জাতির কর্মকান্ড হতে পারে না। অবিলম্বে সাবেক সাংসদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মইন উদ্দীন খান বাদলের কবরে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করতে হবে।