প্রধান শিক্ষকদের পদত্যাগ চায় শিক্ষার্থীরা, দুদকে অভিযোগ, তদন্ত কমিটি গঠন
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বাগজানা দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ এমদাদুল হকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগে বিদ্যালয়ের একাংশের শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবি জানিয়ে স্কুলের মাঠে আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা। সেদিন ক্লাস বর্জন করে স্লোগানের মধ্যদিয়ে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ চান তারা। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে যান। এঘটনার সুষ্ঠ বিচার ও তদন্তের জন্য দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অফিসে
শিক্ষার্থীদের পক্ষে ওয়াহেদুল্যাহ খান আদনান অভিযোগ করেছেন।
প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হকের বিরুদ্ধে দুদকে দেওয়া অভিযোগ গুলো হলো-অভিযোগগুলো হলো, টাকা দিয়ে প্রধান শিক্ষক চাকুরীতে যোগদান, পরবর্তীতে সাবেক কমিটির যোগসাজসে নিয়োগ বানিজ্য, স্কুলের পুকুর পছন্দের ব্যাক্তির নিকট লিজ প্রদান, প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ফান্ডের টাকা লোপাট, অকারনে ছাত্রীদের শরীর স্পর্শ করা, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে অসৌজন্যমুলক আচরন করা এমনকি বা-মা তুলে গালি দেওয়া। বিগত সময়ে আওয়ামীলীগের দলীয় নেতাকর্মিদের ছত্রছায়ায় প্রধান শিক্ষক প্রতিষ্ঠানের নানান অনিয়ম করে আসত। এখন অন্তবর্তীকালীন সরকার স্বচ্ছভাবে দেশের সকল সেক্টর পরিচালনা করছেন এজন্য এমন দূর্নীতিবাজ শিক্ষকদের পদত্যাগ চায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবক।
অভিযোগের বিষয়ে বাগজানা দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমদাদুল বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে জানি। তদন্তের মাধ্যমে আমার যা হবে, আমি সেটাই মেনে নিব।
অপরদিকে পাঁচবিবি উপজেলার নিকড়দীঘি নান্দুলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ কবীর উদ্দীনের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ে নিয়োগ বাণিজ্য ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে উপজেলা নির্বহাী কর্মকর্তার কার্যালয়ের লিখিত অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। এছাড়া বিদ্যালয় মাঠে ক্লাস বর্জন করে প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা। ওই সময় স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়ে প্রধান শিক্ষক মোঃ কবীর উদ্দীন স্বেচ্ছায় চাকরী থেকে ইস্তফা পত্রে স্বাক্ষর করেন। পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক কবীর উদ্দীনও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয়ের সভাপতি আরিফ সুলতানার নিকট একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
নিকড়দীঘি নান্দুলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ কবীর উদ্দীনের মুঠোফোনে বিভিন্ন সময় একাধিকবার কল দিলেও রিচিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাঁচবিবি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও বিদ্যালয় দুটির সভাপতি আরিফা সুলতানা অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বাগজানা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি তদন্তের জন্য ৫ সদস্যর কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত রির্পোট অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে, দুদকে অভিযোগের বিষয়টি জানা নেই।
অপরদিকে নিকড়দীঘি নান্দুলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধেও লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তের মাধ্যমে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়াও প্রধান শিক্ষক কবীর উদ্দীনকে জোরপূর্বক চাকরী থেকে ইস্তফা পত্রে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে এই মর্মে আমার নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক।