বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় বক্তারা।
ড. মুহাম্মদ ইউনুস বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্য কেঁদেছিলেন।
বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ চট্টগ্রাম মহানগর আহ্বায়ক কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় বক্তৃতা দেন বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির
আহ্বায়ক, লেখক, সাংবাদিক ও গবেষক মো. কামাল উদ্দিন। তার তথ্যভিত্তিক বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন যে, আমাদের বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা, নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুস, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে সম্মান জানিয়ে
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন আমেরিকার টেনেসি রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। ২৫ শে মার্চ রাতে বাংলাদেশে ঢাকায় গণহত্যা শুরু হলে, তিনি তার তিন বন্ধুকে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের কাজে নিযুক্ত হন। তখন তারা বেতারের মাধ্যমে শুনতে পান যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পলাতক রয়েছেন। এই সুযোগে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নির্বিচারে গণহত্যা চালায়। পরে তারা নিশ্চিত হন যে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়েছেন। তবে বঙ্গবন্ধুর পলাতক থাকার খবরে তারা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে বঙ্গবন্ধুর ভাগ্যে কী ঘটতে যাচ্ছে তা চিন্তা করে ড. ইউনুসসহ সবাই কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাদের মন্তব্য ছিল, বঙ্গবন্ধু হলেন এই যুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী একমাত্র নেতা।
পরে জানা যায়, বঙ্গবন্ধুকে ২৫ শে মার্চ রাতেই পাকিস্তানি বাহিনী গ্রেফতার করে। ড. ইউনুসের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম আমেরিকায় “বাংলাদেশ নাগরিক সমিতি” গঠন করা হয় এবং তিনি এই কমিটির সচিব ও মুখপাত্র হিসেবে দেশ স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত কাজ করেন। পরে তিনি সারা আমেরিকায় বাঙালিদের একত্রিত করতে “বাংলাদেশ বন্ধু সমিতি” নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন।
মো. কামাল উদ্দিন ইতিহাসের পাতা থেকে আরও বলেন, ড. ইউনুসের নেতৃত্বে একটি প্রবাসী অস্থায়ী সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, যা বিভিন্ন দেশের সমর্থন পাওয়ার লক্ষ্যে করা হয়েছিল। অন্যদিকে, ভারতে ইন্দিরা গান্ধীর পরামর্শে তাজউদ্দিন আহমদ এবং সৈয়দ নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে ৩০ শে মার্চ বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার ভারতে গঠিত হয়। তখন ড. ইউনুস এবং তার সহযোগীরা এই সিদ্ধান্তের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে তাদের কাজ অব্যাহত রাখেন। ড. ইউনুস ছিলেন প্রকৃত অর্থে স্বাধীনতা এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতি নিবেদিত। তিনি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বকে গভীরভাবে সম্মান ও শ্রদ্ধা করতেন।
নগরের চেরাগি পাহাড়স্থ বঙ্গবন্ধু ভবনে আজ ১৫ আগস্ট বৃহস্পতিবার বেলা ১টায় বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে আরও অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত হোসেন, স ম জিয়াউর রহমান, মোঃ শাহ আলম সিকদার, মুজিবুর রহমান, মোহাম্মদ ইকবাল, নাদিম উদ্দিন রানা, মোহাম্মদ নুর, , মোহাম্মদ ইব্রাহিম, মোহাম্মদ আকাশ, নুর আলম, মোহাম্মদ আলী, মোহাম্মদ সোহেল, শাহাদাত হোসেন, আনোয়ারুল ইসলাম।
সভায় বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টে যাঁরা ঘাতকদের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। মাহফিলে দোয়া ও মোনাজাত করেন মাওলানা মুহাম্মদ মাহাবুবুর রহমান।
শোক সভায় বক্তারা আরও বলেন, সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে ড. ইউনুসের নেতৃত্বে দেশের সংস্কারের পাশাপাশি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্হা এবং রাজনৈতিক দলের মধ্যে আদর্শের চর্চা চালু করার প্রয়োজন রয়েছে।