পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে একীভূত করে অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন এবং চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিত করণের দুই দফা দাবিতে সোমবার ১ জুলাই থেকে কর্মবিরতি পালন করছে মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিসহ সারাদেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৪০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বিশেষ ব্যবস্থায় জরুরী বিদ্যুৎ সেবা চালু রেখেই কর্ম বিরতির পালন করছেন তারা।
মৌলভীবাজার পবিসের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী গতকাল ১লা জুলাই সোমবার থেকে কর্মবিরতি পালন করে।
কর্মবিরতিতে বক্তব্য রাখেন মৌলভীবাজার জোনাল অফিসের এজিএম (ওএন্ডএম) মেহেদী হাসান তালুকদার, কুলাউড়া সাব জোনাল অফিসের এজিএম (ওএন্ডএম) তারেক মাহমুদ, এজিএম (প্রশাসন) ক্লিনটন তালুকদার, জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার রফিকুল ইসলাম, লাইনম্যান গ্রেড -১ মহব্বত আলী, মিটার রিডার কাম মেসেঞ্জার আনিসুজ্জামান।
মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম এডমিন বলেন, দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজে নিয়োজিত পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের দৈত্ব নীতির কারনে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা হতে বঞ্চিত হচ্ছে দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় ৪০ হাজার কর্মকর্তা এবং কর্মচারী। দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজে নিয়োজিত কর্মীরা একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করলেও পদ-পদবী, বেতন-ভাতা, বোনাসসহ পদোন্নতির ক্ষেত্রে চরম বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছে।
বিআরইবির অদক্ষতা ও নিম্নমানের সামগ্রীর কারনে গ্রাহকরা হয়রানির শিকার হচ্ছে। তিনি বলেন, এসব বৈষম্যের বিরুদ্ধে এবং অভিন্ন চাকরি বিধি বাস্তবায়নের দাবিতে চলতি বছরের ০৫ই মে থেকে কর্মবিরতি পালন করে কর্মকর্তা কর্মচারীরা। সমস্যা সমাধানে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে আলোচনায় বসবে বিদ্যুৎ বিভাগের এমন আশ্বাসে কাজে ফিরে যাই। এবং বিদ্যুৎ বিভাগের চাহিদা অনুযায়ী সারাদেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৩৭,৫৪২ জন কর্মকর্তা কর্মচারীর স্বাক্ষর সম্বলিত চিঠি বিদ্যুৎ বিভাগসহ বিআরইবিতে জমা দেয়া হয়। যেখানে বোর্ডের প্রতি অনাস্থা জানানো হয়।
১৫ কার্যদিবসের মধ্যে আলোচনায় বসার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কোন উদ্যোগ নেওয়া হয় নাই এবং সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক সাসপেন্ড, সংযুক্ত ও স্ট্যান্ড রিলিজ যারা আছে সবাইকে এক সপ্তাহের মধ্য অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত থাকলেও সাসপেন্ড দুইজন ও স্ট্যান্ড রিলিজ দুইজনকে অদ্যাবধি অব্যাহতি দেওয়া হয় নাই। তাই আবারো বাধ্য হয়ে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের নিপিড়ন ও শোষণ থেকে বাঁচতে পুণরায় কর্মবিরতিতে যেতে হচ্ছে।
ঘোষিত দুটি দাবি হলো
১। স্মার্ট ও টেকসই বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিনির্মানে আরইবি-পিবিএস একীভূত করণসহ অভিন্ন চাকরি বিধি বাস্তবায়ন করতে হবে।
২। ভবিষ্যত বিদ্যুত ব্যবস্থা সচল রাখতে এবং গ্রাহক সেবার মান উন্নয়নের জন্য সকল চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মচারীদের চাকরি নিয়মিত করতে হবে। সোমবার সকাল থেকে সারাদেশে সবগুলো পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রধান কার্যালয়ের সামনে কর্মকর্তা কর্মচারীরা অবস্থান নেন।
গ্রাহক সেবা সচল রেখে কর্মকর্তা কর্মচারীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বোর্ড কর্তৃক কোন প্রকার উস্কানীমুলক আচরন বা হয়রানী করা হলে যে কোন অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির জন্য পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড এককভাবে দায়ী থাকবে।