January 12, 2025, 10:05 pm
শিরোনামঃ
ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট অনুষ্ঠানে মার্কিন সরকার যুক্ত নয় : মার্কিন দূতাবাস বীর চট্টগ্রামের গর্বিত সন্তান নাদিম চৌধুরীকে কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবী দলের সভাপতি হিসেবে দেখতে চাই বাংলাদেশ স্বাধীনতার পরে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার মতো এমন পতন আর কোন সরকারের হয়নি ঢাকা বিভাগ বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদ….. একজন সৎ ও ন্যায় নিষ্ঠাবান সদর জোনের নবাগত এসি দ্বীনে আলম সিলেট-চট্টগ্রাম ফ্রেন্ডশিপ ফাউন্ডেশন ইতালী শাখার উদ্যোগে সুনামগঞ্জ জেলায় শীত উপহার বিতরণ আনন্দঘন পরিবেশে রিদওয়ান হোসাইন নিলয়ের সুন্নতে খৎনা সম্পন্ন বান্দরবানে আর্ন এন্ড লিভের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরন: দৈনিক নতুন ভোর প্রতিনিধি সম্মেলন-২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে।  দিরাইয়ে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে জমি দখলের অভিযোগ : কুড়িগ্রাম চিলমারীতে প্রতিপক্ষের অনুপস্থিতিতে জমি দখলের চেষ্টা

বাংলাদেশে আরেক আতঙ্কের নাম হল রাসেল ভাইপার @চন্দ্রবোড়া।

নিজস্ব প্রতিবেদক খুলনা।

রূপ বদলে আরো ভয়ানক হয়ে উঠছে কিলিং মেশিন খ্যাত রাসেল ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া সাপ। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তাদের অভিযোজন ক্ষমতা ও বিস্তৃতি। মানুষ দেখলে রাগে ফোঁসফোঁস করতে গিয়ে বসিয়ে দিচ্ছে মরণ কামড়।

আগে যেখানে বাংলাদেশের ৮ থেকে ১০ টি জেলায় দেখা মিলতো এসবের সেখানে এখন বাংলাদেশে প্রায় ২৫ থেকে ২৮ টি জেলায় দেখা মিলছে এই সাপটির। এমন কি রাজধানী ঢাকা জেলা বাদ পড়েনি এই রাসেল ভাইপারের উৎপাত থেকে। বর্তমান চলমান মৌসুমের রাজধানীর দোহারে বিভিন্ন স্থানে দেখা গিয়েছে এই সাপটির।

এই সাপটি বংশ বিস্তার ও বিস্তৃতি এমনভাবে বাড়ছে যে আশা করা যাচ্ছে নিকট ভবিষ্যতে রাজধানীর ভিতর ঢুকে যাবে এই রাসেল ভাইপারের উপদ্রব। কারণ রাজধানীর আশেপাশে বিভিন্ন এলাকা গুলোতে উৎপাত বেড়ে গিয়েছে এই রাসেল ভাইপর বা চন্দ্রবোড়া সাপের।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী ঢাকার নিকটবর্তী জেলা মানিকগঞ্জে হরিরামপুর উপজেলা চর অঞ্চলে গত তিন মাসে মারা গিয়েছে পাঁচ জন। গত দু-তিন বছর ধরে এর উপদ্রব্য গুণ বেড়ে গিয়েছে এসব এলাকাগুলোতে। আবার সাপটিও তার চরিত্র বিভিন্ন রূপে বদলাচ্ছে। বাংলাদেশের বিরূপ পরিবেশন তারা মানিয়ে নিয়েছে নিজেদেরকে। এইসবকে অনেক এলাকায় চন্দ্রবোড়া বা উলুবড়া নামে পরিচিত রয়েছে। ভূমিতে বসবাসকারী পৃথিবীর সর্বোচ্চ বিষধর সাপের মধ্যে পঞ্চম স্থানে রয়েছে এই সাপটি। কিন্তু হিংস্রতা ও ভয়াবহতা , এবং আক্রমণের দিক থেকে এই সাপটি রয়েছে প্রথম স্থানে।

আক্রমণের দিক থেকে এই সাপ এতটাই হিংস্র যে, এক সেকেন্ডের ১৬ ভাগের এক ভাগ সময়ের মধ্যেই অর্থাৎ আপনার চোখের পলক ফেলা মাত্রই আপনাকে আক্রমণ করে কামড়ে দিবে। এই সাপ এক কামড়ে প্রায় ৭ থেকে ৯ মিলিগ্রাম বিষ ঢেলে দেয় যা মানুষকে 15 থেকে 20 মিনিটের মধ্যে মৃত্যুর দিকে ধাবিত করে। এই সাপের কামড়ানোর ফলে মানুষের মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি থাকে, অনেক সময় চার পাঁচ দিন চিকিৎসা নেওয়ার পরেও এই সাপের কামড়ে মানুষের মৃত্যু ঘটে। তবে এই সাপের মূল খাদ্য হলো জমিতে থাকা ইদুর ও ব্যাঙ, যার কারনে এই সাপকে জমিতেই বেশি দেখা যায়। তবে এই সাপগুলো কখনোই শিকারকে একবারে খেয়ে ফেলে না। প্রথমে স্বীকার কে কামড় দেয়, এবং পরবর্তীতে ঐ শিকারটি বিষের যন্ত্রণা ছটফট করতে করতে ইদুর বা ব্যাংক তার গর্তে গিয়ে পৌঁছালে সাপটিও ওই শিকারের পেছনে গিয়ে ইদুর বা ব্যাঙের গর্তে ঢুকে ফেলে ওই গর্তের সকল ইদুর ও ব্যাঙের খেয়ে ফেলে।

আরেকটি ভয়ানক তথ্য হলো এই যে, অন্যান্য সাপ মানুষ দেখলে ভয়ে পালিয়ে যায়, অপরদিকে রাসেল ভাইবার বা চন্দ্রবোড়া সাপটি মানুষ দেখলে তেড়ে আসে ছোবল দিবে বলে। এই সাপ ভয় পেলে বা মানুষের উপস্থিতি টের পেলে ওরা কুণ্ডলী পাকিয়ে বসে থাকে কোন সময় তাকে কামড় দিবে এই অপেক্ষায়। সুযোগ পেলেই জায়গার মতো কামড় দিয়ে বসিয়ে দেয় তাদের বিষ দাঁত। এদের বিষদাত বিশ্বের দ্বিতীয় বিষধর সাপের তালিকায় রয়েছে। রাসেল ভাইপার একবার যে মানুষকে কামড়ায় তাকে বাঁচানো খুবই মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়। অন্যান্য সাপের বেলায় ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে রোগীকে সুস্থ ধরে নেয়া হলেও এই সাপের বেলায় ৫ থেকে ৭ দিন কেটে যাওয়ার পরেও রোগীকে সুস্থ বলে গণ্য করা যায় না। একাধিক রোগী তো সুস্থ হয়ে বাড়ি যাওয়ার পরেও মারা গিয়েছে এরকম রেকর্ড রয়েছে।

অ্যান্টিভেনাম দিয়ে বিষ নিষ্ক্রিয় করা গেলে ও অধিকাংশ সময় রোগির যে স্থানে এ সাপ কামড় দেয় সেই স্থানকে কেটে ফেলে দেওয়া লাগে। রাসেল ভাইপারের বৈজ্ঞানিক নাম ডব্লিউইআ রাসেল ই। ভাইপার সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ বিষধর সাপ হলো এটি। যেখানে অন্যান্য সাপ ডিম পেরে বাচ্চা ফুটায় সেখানে রাসেল ভাইপার বাচ্চা প্রসব করে। এই সাপগুলো একবারে প্রায় ৩০ থেকে ৪০টি বাচ্চা প্রসব করে। যার কারনে খুবই দ্রুত বংশ বিস্তার করছে এই সাপটি । এই সাপটি শুধু বাংলাদেশেই নয় , ভারত, চায়না, কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার সহ আরো অনেক দেশে এদের অস্তিত্ব দেখা যায়।

এই সাপের উপদ্রব আমাদের বাংলাদেশে খুব পরিমাণে বেড়ে গেলেও সরকার এখনো পর্যন্ত কোনো প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি এই সাপের উপদ্রব কমানোর জন্য। তাই এই সাপের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে গেলে সর্বপ্রথম দরকার মানুষের সচেতনতার। যেহেতু সাপগুলো বেশিরভাগই ফসলে জমিতে দেখা যায় তাইপ্রতিটি কৃষকের উচিত ফসলের জমিতে প্রবেশের পূর্বে জমিতে বাঁশ দিয়ে বার বার নাড়াচাড়া দেওয়া যাতে এসব দ্রুত ফসলের জমি থেকে সরে যেতে পারে, দ্বিতীয়ত ধান বা ফসলের কাটার পূর্বে অবশ্যই জিন্সের প্যান্ট গম্বেলার বুট, এবং ফুল হাতার শার্ট পড়ে জমিতে ধান কাটতে হবে।

তারপরও যদি এই সাপের কামড় খেয়ে যান সর্বপ্রথম উক্ত রোগীকে কোন ওঝার কাছে না নিয়ে সরাসরি জেলা হাসপাতাল গুলোতে এই সাপের এন্টিভেনাম দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। তার মূল কারণ হলো উপজেলা হাসপাতালগুলোতে এই সাপের এনটিভেনাম পর্যাপ্ত না থাকা। আর একটা ভুল হয় যে এই সাপটিকে আমরা প্রায় সে ভুল ভেবে অজগর সাপ ভেবে থাকি ।

তাই দেশবাসীর সকলকে অনুরোধ জানাচ্ছি এই নিউজটি সর্বোচ্চ শেয়ার করার জন্য এবং মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করার জন্য ।এই নিউজটি সকলে আপনাদের ফেসবুক আইডিতে শেয়ারের মাধ্যমে মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারলেই আমরা এই সাপের আক্রমণ থেকে দেশবাসীকে নিরাপদে রাখতে পারব।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুকে আমরা