February 13, 2025, 6:34 am
শিরোনামঃ
সাংবাদিকদের জন্য জরুরী নির্দেশনা ফুলের হাসি ফাউন্ডেশনের চতুর্থ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও নতুন কমিটির অভিষেক সুষ্ঠ নির্বাচনের মধ্যেমে যে দল ক্ষমতায় আসবে তারাই বাংলাদেশের ক্ষমতায় থাকবেন : ফারুক নড়াইলে মোটর সাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই যুবক নিহত ও স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে প্রাণ গেল আছিয়ার বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ভারতীয় পুলিশ কর্তৃক বাংলাদেশি নাগরিকের লাশ হস্তান্তর মোংলায় ইউএনও’র বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল, অপসারণে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম। চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রকাশ্যে কৃষি ঋণ বিতরণ করল ৩৫টি ব্যাংক তারাকান্দায় খাস জমি দখল নিয়ে দু পক্ষের সংঘর্ষে আহত -১৫ মধ্যনগরে নিরাপদ সড়কের দাবিতে মানববন্ধন ★খেলতে গিয়ে পুকুরের পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু ★

সিংড়ার সেবা মেডিকেলের নারী কর্মচারীর অবৈধ সম্পর্কের জেরে সংসারের ইতি।

স্টাফ রিপোর্টার:

 

নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলা সদরে অবস্থিত সেবা মেডিকেল কমপ্লেক্স নামের একটি বেসরকারি ক্লিনিকের রিসিভশনিষ্ট পদে কর্মরত রুমা বেগম (৩০) নামের এক গৃহবধূ। সে সিংড়া উপজেলার কতুয়াবাড়ী (চরপাটকল) এলাকার রহিমের একমাত্র কণ্যা। তিনি একাধিক পুরুষের সাথে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলার জের ধরে সংসারে ফাটল ধরেছে। সম্প্রতি একই উপজেলার শাকিল ওরফে বুলবুল (৪০) এর সাথেও পরকীয়ার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। শাকিল বনকুড়ি মাঠপাড়া গ্রামের আবুল কালাম আজাদের ছেলে। সংসার জীবনে শাকিলে দুই পুত্র সন্তানের জনক। বর্তমানে তার স্ত্রী ৭ মাসের গর্ভবতী।

গত আড়াই বছর আগে রোগী আনা নেয়ার সময় সেবা মেডিকেল কমপ্লেক্সের রিসিপশনিষ্ট রুমার সাথে প্রথম পরিচয় হয় শাকিলের। বিনিময় হয় সেল ফোনের নম্বর, এর পরই তাকে মিষ্টি হাসিতে ভূলিয়ে নিজেকে ভার্জিন দাবি করে ভিডিও কলে পবিত্র কুরআন শরীফ ছুয়ে শফথ করে প্রেমের ফাঁদে ফেলতে সক্ষম হয় ধুরন্ধর রুমা। এরপর ওই ক্লিনিকে শাকিলের স্ত্রী’র (২য় সন্তান) সিজার অপারেশনের সময় তাদের সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। গত আড়াই বছর যাবৎ রুমা তার স্বামীকে ফাঁকি দিয়ে চুটিয়ে প্রেম করে। পরবর্তীতে শাকিল-রুমা স্বপ্নে বিভোর হয়ে কল্পনার রাজ্যে ভাষতে থাকে। স্ত্রী ও নবজাতক সন্তানের কথা ভুলে রুমাকে নিয়ে সাজানো গোছানো সংসার পাতার পরিকল্পনা করে শাকিল। এক পর্যায়ে শাকিল তার মাদ্রাসায় রুমাকে বিয়ে করে বাংলা শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ দিতে চায়। রুমাও একসাথে থাকার জন্য তাতে সম্মতি দেয়। কিন্তুু বিধিবাম, স্বপ্নের গুড়েবালি হঠাৎই শাকিল হুজুর জানতে পারে তার প্রেমিকা একজন গৃহবধূ। সে ভার্জিন (সতী/অবিবাহিত) হওয়াতো দুরের কথা ওই নারী বর্তমানে তার ২ নম্বর স্বামীর সাথে সংসার করছে। এর পরই শুরু হয় প্রেম নামের রঙ্গলীলার করুন পরিনতি। এ বিষয়ে জানতে পেরে উন্মাদ পাগলের মতো হয়ে যান প্রেমিক শাকিল। তার মনে শুধু একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে থাকে পবিত্র কোরআন শরিফ ছুয়ে শফথ করে ভালোবাসার পরেও কিভাবে আমাকে
এতো বড় ধোকা দিয়েছে রুমা? তাই তিনি ছুটে যান সেবা ক্লিনিকের অভ্যর্থনা কক্ষে । রাগে ক্ষোভে ফেটে পড়েন শাকিল। ক্ষিপ্ত হয়ে তার প্রিয়তমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এ সময় প্রচন্ড কান্নায় ফেটে পড়েন রুমা। ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চায় তার প্রেমিক শাকিলের কাছে। কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে ক্লিনিকের পরিচালক হারুনের উপস্থিতে সম্পর্কের নামে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার বিষয় উল্লেখ করে শাকিল বলেন, মালিকের মনোরঞ্জন জুগিয়ে চাকরি করিস আর আমাদের মতো ছেলেদের ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নিস। এ সময় রুমার সহকর্মীদের মাধ্যমে শাকিল জানতে পারে শুধু তার সাথেই নয়, ওই ক্লিনিকের পরিচালক হারুনের সাথেও রয়েছে রুমার অবৈধ সম্পর্ক।

রুমার ব্যাবহৃত মোবাইল নম্বরের কল লিস্ট সুত্রে জানা যায়, শাকিল আহমেদ ওরফে বুলবুল ০১৭৫৫-৩১৫২২৮, ০১৬০৩-৩৫৩৮২৭ ও ০১৭৭৩-৫৮০২৫৮ সহ মোট তিনটি নম্বর থেকে প্রতিদিন ৫০-৬০ বার কথা বলতেন । এ তথ্যের সত্যতা আছে মর্মে স্বীকার করেছেন শাকিল। তবে তিনটি নম্বরের একটি তার স্ত্রী’র বলেও জানিয়েছেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রেমিক পুরুষ শাকিল একজন বিবাহিত তার ২টি ছেলে সন্তান রয়েছে। তার স্ত্রী’র কোল আলো করে আসতে চলেছে আরেকটি নবজাত।
শাকিল ওরফে বুলবুল কখনও ইসলামি ফাউন্ডেশন কর্মরত আবার কখনও কখনও বনকুড়ি নূরানী হাফেজিয়া মাদ্রাসার (শিক্ষক) বড় হুজুর বলে দাবি করতেন। প্রকৃত অর্থে সরেজমিনে এই তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায়নি। তবে সে হিয়াতপুর বাজার জামে মসজিদের ইমাম ও মাদ্রাসার শিক্ষক বলে জানা যায়। সেখানে শাকিল আবাসিকে থাকতেন, মাঝেমধ্যে রুমাকে তার স্ত্রী পরিচয়ে নিয়ে যেতেন এবং সিংড়া তুলাপট্টির মা হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টে খাওয়াদাওয়া করতেন।

এ বিষয়ে শাকিল বলেন, রুমা ভিডিও কলে কোরান শরিফ ছুঁয়ে সাজিয়ে গুছিয়ে নিজেকে ভার্জিন দাবি করে মিথ্যা প্রলভোনে আমাকে ফাঁসিয়েছে। আমি আগে জানতাম না যে তার স্বামী আছে। তবে আমি তাকে মন থেকে প্রচন্ড ভালোবেসে বিয়ের প্রস্তুুতীও নিয়েছিলাম। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরে বর্তমানে আমি পারিবারিক ভাবে অশান্তিতে আছি। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার আমার স্ত্রী’র সেবা ক্লিনিকে রুমার সাথে বাকবিতন্ডও হয়েছে।

এ ব্যাপারে কথা বলতে সেবা মেডিকেল কমপ্লেক্স এর রিসিপশনিষ্ট রুমা কে তার ব্যাবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল দিলে নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে রুমার স্বামী মোশাররফ হোসেন জানান, গত ২০১৭ সালের আনুমানিক এপ্রিল মাসের দিকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রথম পরিচয় হয় রুমার সাথে। এরপর দীর্ঘ ৩ বছর চলে প্রেমের সম্পর্ক। পরে রাজশাহীতে এসে কোর্ট এভিডেভিডের মাধ্যমে কাজী অফিসে ২০/১০/২০১৯ ইং সালে আমরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। বিবাহের পর রাজশাহী রায়পাড়া এলাকার নাজমুল হক নামের এক ব্যাক্তির বাড়িতে ১ বছর ভাড়া থাকি। সেখানে থাকাকালীন সময়ে আমি পরিবারের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয় করে পরিপূর্ণ সংসার গড়ে তুলি। তারপর রুমার পরিবারের পরামর্শে রাজশাহীর ভাড়া বাসা থেকে যাবতীয় জিনিসপত্র নিয়ে আমরা নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলায় চলে যায়। সেখানে পেট্রোবাংলা মোড় নামক স্থানে আলাউদ্দিন এর বাড়িতে ভাড়া থাকি। দীর্ঘ ১৮ মাস আলাউদ্দিনের বাড়িতে থাকার পর ০১/০৭/২০২৩ ইং সালে পাটকল এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ি ভাড়া নিই। আলাউদ্দিন এর বাড়িতে থাকাকালীন সময়ে হঠাৎ করেই আমার স্ত্রী তার মা-ভায়ের পরামর্শে আমাকে না জানিয়ে পেট্রো বাংলা মোড়ের সেবা ক্লিনিকে রিসিভশনিষ্ট পদে চাকরি নেন। এরপর থেকেই আমার সাথে সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে। প্রথমের দিকে রুমা ডিউটি থেকে এসে বলতো ক্লিনিক পরিচালক হারুন অর রশিদ আমাকে কু-প্রস্তাব দেয় এবং আমাকে স্পর্শ করার চেষ্টা করে। আমি চাকরি ছেড়ে দিতে বললে নানান তালবাহায় চাকরি করতে থাকে এবং হারুন সম্পর্কে আর তেমন কিছুই বলেনা। এরই মাঝে অলৌকিক ভাবে তার বেতন বাড়তে থাকে। আমি জানিনা অথচ একদিন রুমা মুখ ফসকে বলে ফেলে তার বেতন বেড়েছে। পরবর্তীতে আমি বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারি যে, শাকিল নামের এক ব্যাক্তির সাথে আমার স্ত্রী পরোকীয়ায় লিপ্ত হয়েছে। তখন আমি তাকে ৭ দিনের মধ্যে চাকরি ছাড়ার জন্য বলি। এ সময় চাকরি না ছাড়লে আমি তাকে তালাক দেওয়ার কথা জানায়। এ কথা শুনে আমার স্ত্রী আমাকে সাফ জানিয়ে দেয় তুমি তালাক দিলেও আমি চাকরি ছাড়বো না। সে চাকরি না ছাড়ায় আমি ২১/০১/২০২৪ ইং তারিখে তালাক নোটিশ পাঠায়। তবে রাজশাহী থেকে সিংড়াতে যাওয়ার পর বিভিন্ন সময়ে আমার স্ত্রী ও শাশুড়ী মিলে জমি ক্রয় ও বাড়ি নির্মান সহ নানান প্রলোভনে আমার কাছ থেকে নগদ অর্থ হাতিয়ে নেয়। ঘরের আসবাবপত্র, স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ অর্থ সহ মোট ১১-১২ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলেও জানান মোশাররফ। তালাক দেওয়ার পর আমার প্রদেও সকলকিছু ফেরত চাইলে তারা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানায়।

এ ঘটনায় চিহ্নিত করা মুশকিল কে কার সাথে মিথ্যা বলে প্রতারনা করেছে, প্রেমিক নাকি প্রেমিকা? নাকি প্রতারিত হয়েছে তার স্বামী! তবে অনুসন্ধানে উঠে এসছে চমকপ্রদ সব তথ্য। এই রুমার শুধু শাকিল কিংবা হারুনের সাথেই অবৈধ সম্পর্ক নয়। রয়েছে এর আগে-পরের প্রায় ডর্জন খানেক পুরুষের সাথে অবৈধ সম্পর্কের ঘটনা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুকে আমরা