পাকিস্তানের একটি উচ্চ আদালত রাষ্ট্রীয় গোপন নথি ফাঁসের অভিযোগে কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সাজা বাতিল করেছেন। তার আইনজীবী ও দল সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে। তবে অন্য মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার কারণে তিনি আপাতত কারাগারেই থাকবেন।
৭১ বছর বয়সী ইমরান খান ২০২২ সালে ওয়াশিংটনে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতের ইসলামাবাদে পাঠানো একটি গোপন বার্তা প্রকাশের অভিযোগে নিম্ন আদালতে ১০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন।
তিনি গত বছরের আগস্ট থেকে কারাগারে রয়েছেন।
২০১৮-২০২২ সালে ইমরান খানের মেয়াদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশিও এই অভিযোগ থেকে খালাস পেয়েছেন, যা জেলে থাকা নেতার জন্য একটি বড় বিজয়। ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের আইন বিষয়ক মুখপাত্র নাঈম পাঞ্জুথা এক্সে একটি পোস্টে বলেছেন, ‘আল্লাহকে ধন্যবাদ, সাজা বাতিল করা হয়েছে।’
ইমরান খান বলেছিলেন, গোপন নথিটি পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও মার্কিন সরকারের তার সরকারকে পতনের ষড়যন্ত্রের প্রমাণ ছিল।
ওয়াশিংটন ও পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
রাষ্ট্রীয় গোপন নথি ফাঁসের মামলাটি ছিল চারটির মধ্যে একটি, যেটিতে ইমরান খানকে ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনের ঠিক আগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। এর মধ্যে আরো দুটি মামলায় তিনি আপিল করলে সাজা স্থগিত করা হয়। কিন্তু সোমবারের খালাস সত্ত্বেও সাবেক এই ক্রিকেট তারকা কারাগারে থাকবেন।
কারণ তৃতীয় স্ত্রী বুশরা খানের সঙ্গে তার বিয়ে সম্পর্কিত আরেকটি মামলায় সাত বছরের সাজা চলছে।
ইমরান খানের অন্য একজন আইনজীবী আলী জাফর একটি টিভি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আমরা এই বিজয় উদযাপন করব।’ ইমরান খান তার অন্য মামলাগুলোতেও খালাস পাবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।
সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাজহার আব্বাস বলেন, ‘এটি একটি বিশাল রাজনৈতিক ও আইনি বিজয়।’ তবে তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন, ইমরান খানকে যেকোনো সময় মুক্তি দেওয়া হবে বলার সময় এখনো আসেনি।
রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সহিংসতা উসকে দেওয়ার অভিযোগসহ আরো কয়েকটি মামলায় ইমরান খানের নাম রয়েছে।
ইমরান খান দেশটির শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর সঙ্গে বিরোধিতা করেছেন, তাকে ও তার দলকে লক্ষ্যবস্তু করার অভিযোগ করেছেন। সামরিক বাহিনী এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এবং গত বছর তার প্রাথমিক গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে সহিংস বিক্ষোভের সময় রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় হামলার জন্য ইমরান খান ও তার সমর্থকদের বিচারের আহ্বান জানায়। ইমরান খান ও তার দলকে ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। তবে কারাবন্দি নেতার সমর্থনপুষ্ট প্রার্থীরা সর্বাধিক আসন জেতেন। তবে তারা সরকার গঠন করতে পারেননি। পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বে সরকার গঠন হয়।